প্রত্যয় ডেস্ক :চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার আগে যে শ্রেণির মানুষেরা ঋণের বোঝায় দিশেহারা হয়ে পড়েন, তাদের পাশে দাঁড়াতে সিঙ্গাপুরে চালু হওয়া সমা (Sama) স্টার্টআপ বাংলাদেশেও কাজ করবে। বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আবেদন করছে তারা।
‘সমা’ অ্যাপ নিয়ে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিবিসিতে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সিঙ্গাপুরে এখন সাড়ে তিন লাখের বেশি প্রবাসী শ্রমিক কাজ করেন। যাদের অধিকাংশ বাংলাদেশ এবং ভারতের নাগরিক।বিবিসি বলছে, এসব শ্রমিক সিঙ্গাপুরে পা রাখার আগেই ঋণের কবলে পড়েন। প্রথম কয়েক মাস, কখনো বছর লেগে যায় তাদের সেই ঋণ শোধ করতে।
সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মীর থেকে কর্মসংস্থান এজেন্টরা দুই মাসের বেশি বেতন নিতে পারেন না। কিন্তু অন্য দেশে সিঙ্গাপুর এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই কর্মীদের চাকরি নিয়ে দেশটিতে যাওয়ার পরেও নিজ দেশের এজেন্টদের মাসের পর মাস অর্থ দিয়ে যেতে হয়।এই সমস্যা থেকে শ্রমিকদের মুক্তি দিতে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ‘সমা’ স্টার্টআপের যাত্রা শুরু হয় গত এপ্রিলে। এখান থেকে কর্মীরা নিজেদের পছন্দমতো চাকরি খুঁজে নিতে পারেন। এ জন্য সর্বোচ্চ দুই মাসের বেতন দিতে হয় তাদের।
অন্য কোম্পানির সঙ্গে পার্থক্য: সহপ্রতিষ্ঠাতা নেমানজা গ্রুজিক এবং কীর্তন প্যাটেল বিবিসিকে বলেছেন, তারা কোম্পানিগুলোর থেকে ‘ফি’ নেয়। যেখানে শ্রমিকরা কাজ করছেন, তাদের বুঝিয়ে এ বিষয়ে রাজি করান। কিন্তু অন্যরা শ্রমিকদের থেকে ‘ফি’ নেয়। এতে তাদের ওপর চাপ পড়ে।কীর্তন প্যাটেল বলছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি শ্রমিকরা ঋণের চিন্তা বাদ দিয়ে কাজ করলে বেশি আউটপুট দেন।’
বাংলাদেশে আসার বিষয়টি জানিয়েছেন নেমানজা গ্রুজিক। তিনি বলেন, ‘বিদেশি এজেন্টদের প্রতি শ্রমিকদের নির্ভরতা কমাতে আমরা বাংলাদেশ এবং ভারতে কাজ করতে যাচ্ছি। এ জন্য নিবন্ধনের আবেদন করছি।’চাকরিপ্রত্যাশীরা কোম্পানিটির হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে সব কাগজপত্র জমা দিতে পারেন।অ্যাপে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫০০ মানুষ নিবন্ধন করেছেন। এখানে শ্রমিকরা তাদের বেতন ডিজিটাল ওয়ালেটে রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে দেশে সরাসরি অর্থ পাঠানো যায়।
অ্যাপটির মাধ্যমে বাংলাদেশের জাহিদ আলী নামের এক যুবক সিঙ্গাপুরে ড্রাইভারের চাকরি পেয়েছেন।২৮ বছর বয়সী জাহিদ দেশটিতে ৫ বছর কাজ করার পর মেয়াদ শেষ হওয়ায় অন্য চাকরি খুঁজছিলেন।‘তারা আমাকে ভালো একটি চাকরি পেতে সাহায্য করেছে,’ জানিয়ে জাহিদ বলেন, ‘কোনো কষ্ট হয়নি।’চুয়া চি পিন নামে এক ব্যক্তি এই অ্যাপের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক ব্যবসায় কিছুদিন আগে একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বিবিসিকে জানান, সমার মাধ্যমে আরও কর্মী নিয়োগ দিতে চান।